আরিফুজ্জামান তুহিন, ফেসবুক: গতকাল ও আজ এখন পর্যন্ত  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ  বিজয়ী হওয়ায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান, নেপাল, ব্রাজিল, মরক্কো, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, ভুটান এবং ফিলিপিন্স, জাপান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, আর্জেন্টিনা, ইন্দোনেশিয়া, রিপাবলিক অব কোরিয়া, ব্রুনেই দারুসসালাম, মালয়েশিয়া, মিশর, আলজেরিয়া, কুয়েত, লিবিয়া, ইরান, ইরাক, ওমান, কাতার, সৌদিআরব, পাকিস্তান, মরক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ফিলিস্তিন।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের গতকালের বিবৃতিটাও বেশ ইন্টারেস্টিং। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। সাথে তারা বলেছে যে, তারা যে কোয়াড বানাইছে, মানে ইন্দো এশিয়া প্যাসিফিক সাগর এলাকায় বাংলাদেশকে তারা পাশে চায়। 

জাপানকে  আমেরিকার ভাই হিসেবে ধরা হয়। আর দক্ষিণ এশিয়াতে পাকিস্তান হলো আমেরিকার ভায়রা ভাই। সিঙ্গাপুর, ফিলিপিন্স’র মত দেশগুলো বা দক্ষিণ কোরিয়ার মত দেশ আমেরিকার শুধু মিত্রশক্তিই না, কৌশলগত মিত্রশক্তি। তার মানে হলো  আমেরিকা খোলামেলা সমর্থন দেয়ার আগে নিজের লজ্জা ভাঙ্গতেছে মিত্রদের দিয়ে সমর্থন করিয়ে। 

এরপর আমেরিকার প্রতিষ্ঠান এক্সন মবিল বাংলাদেশের গোটা সাগরভাগের তেল গ্যাস অনুসন্ধানে চুক্তি করবে। আপনাদের ধারণা কী? আমেরিকার অন্যতম কোম্পানির সাথে সরকার তেল গ্যাস উত্তোলনে চুক্তি সই করবে আর আমেরিকা সরকারকে ডিস্টার্ব করবে?

আগের আমলের রাজনীতিবিদরা পড়াশোনা করতেন, মাঠে মানুষের সাথে থাকতেন। তাদেরকে উজ্জীবিত করতেন রাজনীতি দিয়ে, কর্মসূচি দিয়ে। এখনকার রাজনীতিবিদরা ইউটিউবে রাজনীতি খোঁজে। আর ইউটিউবাররা সকাল বিকেল সরকার ফেলে। এদের মনে রাখা উচিত, জনপ্রিয়তা আর ক্ষমতা এক না।

২.

২০১৮ সালের নির্বাচনের ৬ মাস আগে আমাকে দেশের অন্যতম প্রভাবশালী (সরকারি না) এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছিলেন, কতদিন এই সরকার থাকবে?

জবাবে আমি বলেছিলাম, ২০২৯  পর্যন্ত পশ্চিমারা বড় ধরনের ঝামেলা করবে না।  বাইডেন জিতলে ডেমোক্রেসি, মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতার ইস্যুগুলো সামনে আসবে কিন্তু এতে সরকার পড়ে যাওয়ার মত অবস্থা হবে না।

তিনি এই ব্যাখার কারণ জানতে চাইলে তাকে বলেছিলাম, আমেরিকা,  ইউরোপিয় ইউনিয়নের প্রভাবশালী দেশগুলো, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, রাশিয়া, ভারত, সৌদি আরবের বড় বিনিয়োগ এসেছে ও আসছে বাংলাদেশে। সামনে আরও বড় বিনিয়োগ আসবে।  এসব বিনিয়োগ একটা রিজিমের মধ্য দিয়ে বা একটা শাসনের মধ্য দিয়ে যদি না তোলা যায় তাহলে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। এই যে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ কেন আমেরিকা ও ইউরোপ ঝুঁকিতে ফেলবে? কেন জাপান তার বিনিয়োগ ঝুঁকিতে ফেলবে? বিনিয়োগের ফলাফল শেষ হলে তবেই নতুন কোনো চিন্তা তারা করবে। 

কারণ দুনিয়াতে পুঁজি তার নিরাপত্তা নিজেই তৈরি করে। পুঁজির নিরাপত্তার জন্য পুঁজি সবকিছুই করবে। 

সাবেক ওই বামপন্থি লোকটার আমার কথা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছিল, তবে কষ্ট করে হলেও ঢোক গিলেছিল।